Sunday, February 3, 2013

একুশে বইমেলা-২০১৩ দ্বিতীয় দিন প্রকাশিত বইগুলো


অমর একুশে বইমেলায় দ্বিতীয় দিনে প্রকাশিত উলেখ্যযোগ্য বইগুলো

বসন্ত বিলাপ,হুমায়ূন আহমেদ ও মুক্তিযুদ্ধ কোষ (১ম খণ্ড),মুনতাসীর মামুন


সংস্কৃতি ও সংস্কৃতিসাধক ,আনিসুজ্জামান ও সনেটসমগ্র, আল মাহমুদ


বিকেলে এখন শাহবাগ মোড় পার হলেই চোখে পড়বে সেই চিরচেনা ফেব্রুয়ারির দৃশ্য। ছোট ছোট দলে নানা বয়সী লোক এগিয়ে চলেছে বাংলা একাডেমীর দিকে। টিএসসির মোড়ে বসেছে তারুণ্যের প্রাণখোলা আড্ডা। শিল্প-সাহিত্য থেকে রাজনীতি-অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসহ হেন কোনো বিষয় নেই, যার চর্চা হচ্ছে না সেই আড্ডায়। 
আরও একটু সামনে এগিয়ে গেলে আণবিক শক্তি কমিশনের সামনে বইমেলার তোরণ। তোরণটির রং চটে গেছে প্রথম দিনেই। মনে হয়, পুরোনো কোনো পারটেক্স বোর্ড দিয়ে তৈরি। তার পাশেই আর্চওয়ে। সেটি পেরিয়ে গ্রন্থানুরাগীরা প্রবেশ করছে প্রাণের মেলায়।
গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দিনেও ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। বেলা ১১টায় খুলেছিল মেলার ফটক। লোকসমাগমও ছিল যথেষ্ট। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে প্রাঙ্গণভরা লোক। বিক্রিও হয়েছে বেশ।
মেলামঞ্চের আলোচনা: মেলামঞ্চে শুরু হয়েছে নিয়মিত কার্যক্রম। গতকাল বিকেলে ছিল ‘অমিত সম্ভাবনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার। সভাপতিত্ব করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। আলোচনা করেন মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, আতিউর রহমান, এম এম আকাশ ও মাসুদা ভাট্টি। বক্তারা বলেন, রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের বিকাশ-সম্ভাবনা অপ্রতিরোধ্য। এককালে যারা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যায়িত করত, তারাই আজ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বিপুল অগ্রগতিতে বিস্মিত। মানব ও সামাজিক উন্নয়ন সূচকে ক্রম-ঊর্ধ্বগতি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের এক নতুন ভাবমূর্তি সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের উত্থান আজ আর কোনো রূপকথার বিষয় নয়, বরং তা এক বাস্তব সত্য। এই অগ্রসরমাণতার ধারা অব্যাহত রাখতে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে দায়িত্বশীল গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশ ঘটাতে হবে।
সন্ধ্যায় গানের সুর-মূর্ছনায় ভরে উঠেছিল মেলা প্রাঙ্গণ। মঞ্চে গান শুনিয়েছেন সাদি মহম্মদ, খায়রুল আনাম শাকিল, শাম্মী আখতার, ফেরদৌস আরা, রথীন্দ্রনাথ রায়, চন্দনা মজুমদার, অদিতি মহসিন, মাহমুদুজ্জামান বাবু, নন্দিতা ইয়াসমিনসহ অনেকে।
প্রথমার স্টলে ভিড়: দ্বিতীয় দিনেও প্রথমার স্টলে ছিল উইকিলিকসে বাংলাদেশ বইটি কিনতে ক্রেতাদের ভিড়। সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসে বাংলাদেশ সম্পর্কে যেসব নথি প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন মশিউল আলম। এ ছাড়া গতকাল নতুন বই এসেছে মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের প্রবন্ধ ভাষার আপন পর, আকবর আলি খানের অর্থনীতিবিষয়ক প্রবন্ধ আজব ও জবর-আজব অর্থনীতি এবং শেখ আবদুল হাকিমের অনুবাদ করা এরিক মারিয়া রেমার্কের দ্য ব্ল্যাক অবিলিস্ক। হুমায়ূন আহমেদের বসন্ত বিলাপ, হরিশংকর জলদাসের উপন্যাস মোহনা, গত বছর প্রকাশিত আনিসুল হকের উপন্যাস যারা ভোর এনেছিল ভালো বিক্রি হয়েছে। 
নতুন বই ও মোড়ক উন্মোচন: নজরুল মঞ্চে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন পর্ব শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় দিন থেকেই। গতকাল তথ্যকেন্দ্রের সূত্র অনুসারে সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। তথ্যকেন্দ্রে নতুন বইয়ের তালিকায় নাম জমা পড়েছে ২০টি। নতুন বইয়ের মধ্যে রয়েছে বেঙ্গল পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত আনিসুজ্জামানের প্রবন্ধ সংস্কৃতি ও সংস্কৃতিসাধক। শুদ্ধস্বর থেকে এসেছে আল মাহমুদের সনেটসমগ্র। সময় প্রকাশনী থেকে এসেছে মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ১২ খণ্ডে মুক্তিযুদ্ধ কোষ। আগামী থেকে সৈয়দ আবুল মকসুদের জীবনীগ্রন্থ ভাসানী কাহিনী, মৌলি আজাদের গল্পগ্রন্থ প্রিয়ানা, চোখ ও ঝর্ণার জলে স্নাত এক প্রপাতের ফোয়ারা, মুক্তধারা থেকে আহসান হাবীবের স্পোর্টস জোকস। অন্যপ্রকাশ থেকে এসেছে হুমায়ূন আহমেদের নতুন বই হিজিবিজি। এটি তাঁর বিভিন্ন ধরনের লেখাসংকলন। প্রথম দিনে এসেছিল হুমায়ূন আহমেদের ছয়টি ভ্রমণবিষয়ক বইয়ের সংকলন ভ্রমণসমগ্র।
আজ মেলা শুরু হবে বেলা তিনটা থেকে। গ্রন্থানুরাগীদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে বিকেল-সন্ধ্যা।


No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...